শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শহীদদের রক্ত বৃথা যায়নি এবং বৃথা যেতে পারেনা, এটাই প্রমাণিত সত্য। লাখ লাখ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার প্রতিজ্ঞা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব, এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুর আগে পরিস্থিতি মূল্যায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
মাতৃভাষা যথাযথভাবে শিখতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের উন্নয়নের মূল কথা হলো গ্রামীণ এলাকা থেকে শুরু করে সকল ব্যক্তির জন্য মৌলিক অধিকার, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, ‘জনগণের জীবনকে অর্থবহ, উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিচ্ছি, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি যাতে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে।
বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন
শেখ হাসিনা দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার জন্য ছিল না, এটি ছিল বাঙ্গালি জাতি হিসেবে আমাদের সামগ্রিক অর্জনের আন্দোলন, তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) যা করে দিয়ে গেছেন আমাদের এটি ধরে রাখতে হবে।’
তিনি ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরেন এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনগুলো নেতা-কর্মীদের পড়ার জন্য আহ্বান জানান।
‘সব ভাষা সংরক্ষণ করুন’
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা রেখেছি। এটা শুধু আমাদের নয় সমগ্র পৃথিবীতে যাদের মাতৃভাষা রয়েছে তাদের মাতৃভাষা সংরক্ষণের জন্য এবং এর ওপর যেন গবেষণা হতে পারে সেজন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছি। ’
‘আমাদের ওপর একটা মহান দায়িত্ব পড়ে গেছে সারা বিশ্বের ছোট, বড় যত ভাষাভাষি বা মাতৃভাষা রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণ করার, সেখানে রাখার এবং গবেষণার সুযোগ করে দেয়ার। পৃথিবীতে কিন্তু মাতৃভাষা সংরক্ষণের জন্য এই একটিই এতবড় ইনস্টিটিউশন গড়ে তোলা হয়েছে। আর কোথাও এর দৃষ্টান্ত নেই,’ বলেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার চেতনা নষ্ট করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই এসেছে স্বাধীনতা: প্রধানমন্ত্রী
একুশে পদক বিতরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
খাদ্যে ভেজাল রোধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ আলোচনা সভাটি গণভবন থেকে সঞ্চালনা করেন।
অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, শিক্ষা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি প্রমুখ বক্তব্য দেন।